This content has been archived. It may no longer be relevant
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে শোক সভা অনুষ্ঠিত
নেপালের ত্রিভুবন বিমান বন্দরে ইউএস বাংলা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য আহত ও নিহত ব্যক্তিদের জন্য ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের তিন দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে শোক ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচি পালন করা অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ, ২০১৮) বেলা এগারটায় রাষ্ট্রীয় শোক কর্মসূচির সাথে একাত্ম ঘোষণা করে তিন দিন ব্যাপী শোক কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে মালিবাগে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের লেকচার গ্যালারী-১ এ শোক সভার আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শোক সভায় নেপালে ইউএস বাংলা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। পাশাপাশি ওই ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে প্রার্থনা ও দোয়া করেন শোক সভায় উপস্থিত ব্যক্তিরা।
শোক সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ফারুকুল ইসলাম বলেন, নেপালে ইউএস বাংলা বিমান বিধ্বস্ত ঘটনা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের জন্য মহা বিপর্যয়। এ বিপর্যয় যেন আর না ঘটে এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে হবে। এ দূর্ঘটনায় আমরা হারিয়েছি তরুণ কিছু চিকিৎসকদের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের প্রিন্সপাল অধ্যাপক ডা. এম.এ. আজিজ গভীর দুঃখের সঙ্গে নেপাল দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত প্রত্যেকে ব্যক্তি ও শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও যারা আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বলেন, নেপালে বিমান দূর্ঘটনায় মূহ্যমান জাতি।
তিনি বলেন, আমরা কিছু তরুণ সম্ভাবনাময় চিকিৎসক হারিয়েছি। মেডিকেলে কে কোন দেশের তা বিবেচনা করা হয় না। সবাইকে এক করে ভাবা হয়, মেডিকেল পেশায় নিয়োজিত সকলে সকল রাষ্ট্রের সম্পদ। নেপালে দূর্ঘটনায় বাংলাদেশের তিনটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়েছেন। জালালাবাদ রাকিব রাবেয়া, কুমুদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বলেছি। তারা শোকে মূহ্যমান। তিনটি কলেজের প্রিন্সিপালরা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়েছেন। তারা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
শোক সভাটি ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুশফেকা রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডা. এম.এ. বাকী, অধ্যাপক ডা. খুদেজা নাহার, প্রভাষক ডা. আহমেদ কবির হিমেল। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক রাতুল সাহা, আশরাফুল ইসলাম ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জামিল জাবায়েদ।
শোক সভা শেষে দোয়া মাফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাফিল পরিচালনা করেন সিদ্দিশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ইমাম মওলানা এম.এ. শুকুর।
শোক সভায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে চার ক্রু ও ৬৭ আরোহী নিয়ে বাংলাদেশি ইউএস-বাংলার বিএস-২২১ ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। এতে অর্ধশত যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩২ জন। নিহতদের মধ্যে সিলেটের রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ১১ শিক্ষার্থী রয়েছেন।এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ যাত্রী। উড়োজাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন মালদ্বীপ ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। এদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৬৫ এবং দুই শিশু ছিল।